করোনা সংকট মোকাবিলায় দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগের সুপারিশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি। ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার কমিশনের বিশেষ সভায় এই সুপারিশ অনুমোদন করে ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পিএসসির উপ-সচিব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিস্তারিত ফলাফল পিএসসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলে বলা হয়েছে।
ক্যাডার হিসাবে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসাবে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ৫৪জন নার্স নিয়োগের সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন ২০১৮ সালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে। নার্সদের ১০ম গ্রেডের নন-ক্যাডার দ্বিতীয় পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্রঃ ইত্তেফাক।
করোনাভাইরাসের বিস্তারের পর চিকিৎসক সংকটের কারণে আক্রান্তদের চিকিৎসা ও অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। এযাবৎ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসকও। বেশ কিছু ডাক্তারদের কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়েছে। এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নতুন ২ হাজার চিকিৎসক এবং ৬ হাজার নার্স নিয়োগের কথা জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে স্বাস্থ্য থেকে পিএসসিতে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়। নতুন চিকিৎসক ও নার্সরা নিয়োগের ফলে করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় কিছুটা গতি আসবে বলে আশা করছে সরকার।
২০১৮ সালে ১০ এপ্রিল ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই বছরের ৩ আগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন অংশ নেন। পরীক্ষায় পাশ করেন ১৩ হাজার ৭৫০ জন চিকিৎসক। চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার পর আট হাজার ৩৬০ জন উত্তীর্ণ হন। সেখান থেকে চার হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। গত নভেম্বর মাসে তাদের মধ্যে থেকে ৪ হাজার ৪৪৩ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বাকিরা অপেক্ষমান তালিকায় ছিল।
ওই তালিকা থেকে এ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ৫৩৫ জন চিকিৎসককে মেডিকেল অফিসার হিসেবে পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। এছাড়া আরও ২৯ জনকে অন্যান্য দপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ হবে শুনে সুপারিশ পাওয়া এই ৫৬৪ জন চিকিৎসক পিএসসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সেবা পরিদপ্তরের আওতায় চার হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ৬০০ মিডওয়াইফ নিয়োগের জন্য ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ১৬ হাজার ৯০০ চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষায় অংশ নেন। চূড়ান্ত ফলে ১০ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হন।
২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট তাদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে পাঁচ হাজার ১০০ জনকে নিয়োগের জন্য বাছাই করে পিএসসি। যারা তখন নিয়োগ পাননি তাদের এখন নার্সিংহোমে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে পিএসসি। তবে সরকার ছয় হাজার নার্স চাইলেও পিএসসি পাঁচ হাজারের বেশি দিতে পারছে না।
পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘করোনা শুধু জাতীয় নয়, এটি বৈশ্বিক সঙ্কট তৈরি করেছে। সরকারের কাছ থেকে ডাক্তার ও নার্স নিয়োগের চাহিদা পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এজন্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট নিরলস পরিশ্রম করেছেন। নতুন করে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সরা যোগ দিলে চলমান সংকটে জাতি উপকৃত হবে।